খুলনায় কমেছে মাংস বিক্রি

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: কোনো পণ্যের চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে আর চাহিদা কমলে দাম কমে। কিন্তু খুলনায় বিক্রি কমলেও গরু ও ছাগলের মাংসের দাম স্থিতিশীল আছে। সবজিসহ বাজারে সব পণ্যের দামই কমেছে। কিন্তু মাংসের দাম না কমায় ক্রেতারা এখন ঝুঁকছেন হাঁস-মুরগির দিকে।

মাংস বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের কাছে টাকা নেই। যারা আগে সপ্তাহে তিন-চার কেজি করে মাংস কিনেছেন তারা এখন ফিরেও তাকান না। যদিও আসেন এক কেজি কেনেন। নিম্ন আয়ের মানুষদের এখন আর গরুর মাংসের দোকানে দেখাও যায় না।

শনিবার নগরীর ময়লাপোতা, শান্তিধাম মোড়, গল্লামারী, জোড়াকল বাজারসহ কয়েকটি মাংসের দোকানে ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা।

ময়লাপোতা এলাকার গরুর মাংস বিক্রেতারা জানান, করোনার মধ্যেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৫৫০ টাকা। এরপর রোজার ঈদের সময় ব্যবসায়ীরা ৬০০ টাকা করে নিতে থাকেন। পরবর্তীতে হয়ে যায় ৬৫০ টাকা। এ সময়ের মধ্যে বেড়েছে অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও। কমে গেছে বিক্রিরও পরিমাণ। ৮-৯ মাস ধরে একই দামে বিক্রি হলেও মাংসের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই খুলনার বাজারে।

এ বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদ বলেন, ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি গরুর মাংস বিক্রি হয়। কসাইখানা থেকে সকালে মাংস দোকানে আনার পর সাড়ে ১০টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও মাংস বিক্রি শেষ হয় না।

জাহিদ আরও বলেন, এক সময় আমার কাছ থেকে যারা বেশি পরিমাণ মাংস কিনেছেন এখন তারা অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। তাদের কাছে কম কেনার কারণ জানতে চাইলে বলেছেন, অর্থ সংকট যাচ্ছে। দোকানে ৬৫০ টাকা দাম লেখা থাকলেও মাঝে মধ্যে ২০-৩০ টাকা কম রাখা হয়।

গল্লামারী বাজারের কসাই আব্দুর রহিম বলেন, দুবছর আগেও শুক্রবার- শনিবার দু-তিনটি গরু জবাই দিয়েছি। শুক্রবার এলেই মনে হতো ঈদের বাজার। কিন্তু এখন গরুর মাংসের দাম বাড়ায় বেচাকেনার পরিমাণ কমে গেছে। এখন একটা গরু বিক্রি করতেই দিন পেরিয়ে যায়। অনেক সময় ফ্রিজে মাংস রেখে দিতে হয়।

টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাংস বিক্রেতা রাজা বলেন, গরুর চেয়ে মুরগির দাম অনেক কম। এক কেজি গরুর মাংসের দাম দিয়ে তিন-চার কেজি মুরগির মাংস পাওয়া যায়। ফলে ক্রেতারা এখন সেই দিকেই ঝুঁকছেন।

তিনি আরও বলেন, যাদের গরুর মাংস পছন্দ তারা ঠিকই কিনছেন, তবে পরিমাণে অনেক কম।

মাংস কিনতে আসা আব্দু ওয়াদুদ বলেন, করোনার পর থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ কমে গেছে। তাই বেতনও ঠিকমতো হয় না। গরুর মাংস খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সাধ্যে কুলায় না। দু-এক মাস পর পর অল্প পরিমাণ গরুর মাংস কিনি।

রহিমা বেগম বলেন, সবকিছুর দাম কমে। কিন্তু কোনো দিনও দেখলাম না গরু আর ছাগলের মাংসের দাম কমেছে।