নোয়াখালীতে অভিযানঃ অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত ও জরিমানা

নোয়াখালী, ১০ জুন সোমবারঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফোনে প্রাপ্ত একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রোকনুজ্জামান খান। এসময় তাঁকে সহযোগিতা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা ,বিআরটিএ নোয়াখালী সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আতিকুর রহমান ও র‍্যাব -১১  লক্ষীপুর কোম্পানী কমান্ডার পুলিশ সুপার নরেশ চাকমা।

জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার মীর ওয়ারিশপুরে নোয়াখালী-ঢাকা ও নোয়াখালী-কুমিল্লাগামী বাসগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে স্থানভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া নোয়াখালী-চট্টগ্রাম, নোয়াখালী-ফেনী ও লক্ষ্মীপুর-চট্টগ্রামগামী পরিবহনগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে স্থানভেদে ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এসময় গাড়ির সুপারভাইজার ও ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। তারা টিকিটে নির্ধারিত ভাড়া উল্লেখ করেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দেওয়া হয়।

এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ধারা ৪০ অনুসারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে ঢাকাগামী পরিবহন একুশে এক্সপ্রেস, হিমাচল পরিবহন, জননী পরিবহন এবং মোহনা পরিবহনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। একইভাবে চট্টগ্রামগামী জোনাকী পরিবহনের ২টি বাসকে ৫ হাজার ৫শ টাকা, বাঁধন পরিবহনকে ২ হাজার, শাহী পরিবহনকে ৪ হাজার, নীলাচল পরিবহনের ২টি বাসকে ৩ হাজার ৫শ টাকাসহ মোট ১১টি পরিবহনকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করা হয়।

এদিকে বাস চালক ও মালিক পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়। নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী বাস চালক আবদুর রশিদ পাটোয়ারি বলেন, বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা, সোনাইমুড়ি, সোনাপুর থেকে শুরু করে মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড, কুমিল্লার একাধিক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়, সেজন্যই ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছি।

সোনাপুর থেকে মাইজদীগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক এমরান ও মোজ্জামেল হোসেন বলেন, প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১০ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা নিচ্ছি। আগে শ্রমিক সংগঠন, মালিক সমিতি, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড, পৌরসভাসহ বিভিন্ন চাঁদা বাবদ ৮০ টাকা দিতে হতো। এখন ঈদকে কেন্দ্র করে সেটা দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে বাড়তি বাড়া না নিলে নিজের খরচ তোলা সম্ভব হবে না।

সাধারণ যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন, চাঁদাবাজি বা অন্যান্য যে কোন কারণে সব সময় যাত্রীরাই শেষ পর্যন্ত জিম্মি থাকে, ভুক্তভোগীও শুধুমাত্র যাত্রীরাই। একইসাথে তাঁরা আজকের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভোক্তাকণ্ঠ প্রতিনিধির কাছে আরও বেশি সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার অনুরোধ জানান। ।