রাতারাতি দাম বাড়ে পণ্যের

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: কখনও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে; কখনও কারসাজি কিংবা রপ্তানি বন্ধের খবরে অথবা অন্য অজুহাতকে পুঁজি করে রাতারাতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে কাঁচাপণ্য পেঁয়াজ, রসুন ও আদাকে বড় হাতিয়ার করে অসাধুরা। দাম বাড়াতে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সক্রিয় শতাধিক সিন্ডিকেট। তাদের সঙ্গে রয়েছে কক্সবাজার, টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থলবন্দরের ছোট-বড় কয়েকটি সিন্ডিকেট। হঠাৎ কোনো পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে টনক নড়ে প্রশাসনের। তখন জোরদার করা হয় নজরদারি। কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের প্রতিবারই চিহ্নিত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। চিহ্নিত অসাধুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার পেছনে প্রশাসনের নিষ্ফ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন ক্যাবসহ সংশ্নিষ্টরা।

কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল থাকার পর চলতি সপ্তাহ থেকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আবার অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজার। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ৯৫ থেকে ১০০ টাকার চায়না রসুনের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ ও আদার দামও বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। পণ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে কারণ খুঁজতে গিয়ে গত দুই বছরে কারসাজির সঙ্গে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেটের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় খোদ প্রশাসন। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। গত বছর দেশে কভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর করোনাভাইরাস রোধে আদা চায়ের উপকারিতা নিয়ে প্রচার থাকায় এটিকে পুঁজি করে ৮০ টাকার আদা ৩৬০ টাকায় নিয়ে যায় সিন্ডিকেট। দাম এত বৃদ্ধির কারণ খুঁজতে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে ৩২ জনের সিন্ডিকেটের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আজিজ, সিরাজ, কাদের ও জিয়াউর রহমান। ২০১৯ সালে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনেও জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় জেলা প্রশাসন। তিনি আদার পাশাপাশি পেঁয়াজও আমদানি করেন। খাতুনগঞ্জের হাজি সোনা মিয়া মার্কেটে রয়েছে তার প্রতিষ্ঠান। পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজির সঙ্গে খাতুনগঞ্জ ও কক্সবাজারের ১৫ জনের সিন্ডিকেটের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম নিয়ে কারসাজির জন্য প্রশাসনের নিষ্ফ্ক্রিয়তা অনেকাংশে দায়ী। এত বড় অপরাধের জন্য মামলা কিংবা জরিমানা লঘু দণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। এসবের খেসারত দিতে হয় ভোক্তাদের।