দ্বিগুনেরও বেশি দামে পালস অক্সিমিটার বিক্রি, ফার্মেসী বন্ধ

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ৭০০ টাকায় পালস অক্সিমিটার কিনে ১৫০০ টাকায় বিক্রি, বিদেশী পণ্যের মোড়কে আমদানীকারকের কোন সিল নেই, নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম দিয়ে বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের সঙ্গে মেয়াদ আছে এমন পণ্য একত্রে রাখাসহ বিভিন্ন অপরাধ ধরা পড়েছে ম্যাক্সমন ফার্মা লিমিটেড নামের একটি ফার্মেসীতে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাটাবনে অভিযান চালিয়ে এসব অপরাধের প্রমাণ পায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান, মো. শরীফুল ইসলাম।

ভোক্তা কর্মকর্তাদের অভিযানের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফার্মেসীর মালিক (স্বামী-স্ত্রী)। অভিযানে ভোক্তা কর্মকর্তাদের তদারকিতে বের হয়ে আসা অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তারা প্রথমে এসব অপরাধ অস্বীকার করেন। এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। অনেকটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি উপস্থাপন করেন। তবে ভোক্তা কর্মকর্তাদের কাছে এসব যুক্তি গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।

পরে জনস্বার্থে ম্যাক্সমন ফার্মা লিমিটেড নামের ওই ফার্মেসীকে সাত দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এবং আগামী রোববার (০৪ সেপ্টেম্বর) স্ব-শরীরে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ভোক্তা কর্মকর্তা, ফার্মেসী মালিক এবং উপস্থিত সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে ফার্মেসী বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এর আগে গ্লোরিয়াস রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টার নামের আরও একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার। সেখানে খাবারে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রং ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া যায়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল রং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এই অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকেও সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং অধিদপ্তরে এসে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

এছাড়া, অষ্টবেঞ্জন রেস্টুরেন্ট এন্ড হোটেলকে ২০ হাজার টাকা এবং ওয়ান স্টপ ফাস্ট ফুডকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ম্যাক্সমন ফার্মা লিমিটেডে অভিযান পরিচালনা করে দেখলাম, বিপুল পরিমাণ ওষুধ এবং খাদ্যসামগ্রী রয়েছে সেগুলো বিদেশী। এগুলো আমদানীকারকের সিল ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছিল। এবং নিজেরাই মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছিল। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির জন্য সেলফে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তারা আমাদের উপর অনেকটা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এগিয়ে আসে।

তিনি বলেন, যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে, এ কারণে জনস্বার্থে এই প্রতিষ্ঠানটি আগামী সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।