বিক্রেতা নিজেই জানেন না গরু না মহিষের মাংস!

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: মাংস তাজা দেখাতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের ক্ষতিকর রং। গরুর মাংস বলে যা বিক্রি হচ্ছে তা আদৌ গরু নাকি মহিষের মাংস তা নিজেও জানেন না বিক্রেতা। কোনটি আজকের মাংস আর কোনটি গতকালের সেটিও বোঝার উপায় নেই। খাসির মাংসেও চলছে কারচুপি।  

এমনই অবস্থা দেখা গেল রাজধানীর নিউমার্কেটের বনলতা কাঁচাবাজার মার্কেটে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই মার্কেটে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সমন্বিত অভিযান পরিচালিত হয়। এতে বাংলাদেশ মৎস অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও অংশ নেন। 

অভিযানের শুরুতেই জিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের মাংসের দোকানে স্টিলের গামলায় ও ওয়ান টাইম কাপে লাল রংয়ের ঘন পানি দেখে চ্যালেঞ্জ করেন কর্মকর্তারা। প্রথমে দোকান মালিক জিয়া উদ্দিন গরুর রক্ত বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে তিনি স্বীকার করেন এটি রং। মূলত মাংস চকচকে দেখাতে মেশানোর জন্যই রাখা হয়েছিল ওই রঙ। মাংসের চালানপত্রও দেখাতে পারেননি বিক্রেতা। 

এই দোকানে অভিযানের খবর পেয়ে মাংস ঝুলিয়ে রেখেই সরে যান পেছনের ইউসুফ খাশির মাংশ বিতানের কর্মচারীরা। এরপর একে একে মায়ের দোয়া, মমতাজ এন্টারপ্রাইজ, মো. আলাউদ্দিন স্টোর, আক্তার এন্টারপ্রাইজ, মো. আব্দুল করিম স্টোরেও অভিযান চালায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। 

অভিযানে যাওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, মাছের তুলনায় মাংসের দোকানে অসঙ্গতির পরিমাণ বেশি। অভিযানে উপস্থিত জেলা মৎস কর্মকর্তা বিএম মোস্তফা কামাল বলেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার কারণে মাছের বাজার ভেজালের পরিমাণ অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু মাংসের দোকানগুলোতে ওজনে কারচুপি, ওজন বাড়াতে পানি মেশানো, তাজা রাখতে রঙ মেশানোসহ নানান সমস্যা সামনে এসেছে। তারা যে রঙ ব্যবহার করছে সেটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।  

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান বলেন, নিউমার্কেটের কাঁচা বাজারে মাংসে রঙ মেশানোর অপরাধে জিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জিয়া উদ্দিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যান্য দোকানেও আমরা অভিযান চালিয়েছি৷ যেসব ভুল ও অসঙ্গতি পাওয়া গেছে সেসব শুধরে নিতে সতর্ক করা হয়েছে।