শব্দদূষণ রোধ জরুরি

চারদিকেই শব্দ।  যতদূর শোনা যায় খালি শব্দ। বর্তমানে শব্দ দূষণ খুব ভয়াবহ মাত্রায় পৌছিয়েছে। দিন রাত সবসময়ই শব্দদূষণের তীব্র মাত্রার যন্ত্রণা। বিশেষ করে রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনা বিদায় না নিলেও ফিরে এসেছে ভয়ানক শব্দদূষণ। এই দূষণ মানুষের স্বাভাবিকতা কেড়ে নিচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে স্থিরতা, সুস্থতা। কখন এই শব্দদূষণ বন্ধ হবে তা কারও জানা নেই। শব্দদূষণ সহনীয় মাত্রায় না আসলে বা বন্ধ করার ব্যবস্থা না নিলে মানুষের দেহ ও মনে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে।

সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে মানুষ রাতে ঘুমায়। দিনের পাশাপাশি রাতের এই সময়টুকুও হাতছাড়া হয়ে যায়। জেগে থাকতে হয় রাত অবধি। সূর্যাস্ত থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সূর্যোদয় পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের উচ্চ শব্দ অব্যাহত থাকে। এ ধরণের শব্দ উৎপত্তিস্থল থেকে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং রাতের নিস্তব্ধতায় এর ব্যাপকতা আরও গভীরভাবে অনুভূত হয়।

ফলে মানুষের সুনিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটে এবং দেহ ও মনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। কী নগর, কী গ্রাম সর্বত্রই যেন প্রতিযোগিতা দিয়ে শব্দদূষণ বাড়ছে। এ নিয়ে কারো কোন জোরালো ভূমিকাও চোখে পড়েনি কোন সময়। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ চান সাধারণ মানুষ। এর বিহিত চান তারা।

পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নত দেশে নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত গাড়ির হর্ন বাজানো নিষেধ এবং অপরাধ হিসেবে গণ্য। সেখানে উন্মুক্ত স্থানে সভা, সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত মাইকে শব্দ সর্বোচ্চ কত ডেসিবল পর্যন্ত হবে এবং কত সময় অবধি চলতে পারবে তা আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত।

এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, উচ্চ শব্দযুক্ত পরিবেশে যারা বসবাস করে বা কাজ করে তাদের শ্রবণ শক্তি দশ বছরের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হ্রাস পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সাধারণত ৬০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ একজন মানুষকে সাময়িকভাবে বধির করে ফেলতে পারে।

শব্দের সহনীয় মাত্রা হলো শয়নকক্ষে ২৫ডিবি, বসবাস ও খাবার ঘরে ৪০ডিবি, রেস্তোরাঁয় ৪০-৬০ ডিবি, রাত্রিকালীন ৪৫ ডিবি। যখন এই শব্দসীমা অতিক্রম করে তখনই শব্দদূষণ ঘটে। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)।

শব্দদূষণের কারণে শিশু, বৃদ্ধ, রোগী সর্বোপরি সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হ্রাস পাচ্ছে শ্রবণ শক্তি। রাতের বেলা শব্দদূষণের কারণে কষ্ট আরও বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম না হলে কোনো মানুষই সুস্থতা বোধ করেনা। ফলে দিনের বেলা তার কর্মক্ষমতা কমে যায়।