সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে শিশুদের মধ্যেও

এবার আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০ বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেছে ৩৯ জন। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীর মধ্যে মারা গেছে ৬৯ জন।দেশে করোনাভাইরাসে গত দুদিন ধরে শনাক্ত সাত হাজারেরও বেশি। এ তালিকায় রয়েছে শিশুরাও।


গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫২ জন।৫২ জনের মধ্যে একজনের বয়স ১০ বছরের কম। আরেকজনের বয়স ১১-২০ বছরের মধ্যে।

চিকিৎসকরা বলছেন, কয়েকদিন আগেও শিশুদের আক্রান্তের হার ছিল শূন্যের ঘরে। এখন শিশু-রোগী বাড়ছে। গতবছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শিশুদের আক্রান্ত হতে দেখা যায়নি বললেই চলে। এবার মধ্য-মার্চ থেকে আশঙ্কাজনক হারে তাদের সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের জন্য পৃথক ইউনিট চালু হয় গতবছরের ১০ মে। এখন পর্যন্ত এই ইউনিটে প্রায় দুই হাজারের মতো শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। ৪২ বেডের ইউনিটটিতে এখন ভর্তি আছে ১৮ জন।সবচেয়ে কম বয়সী রোগীর বয়স কত ছিল জানতে চাইলে অধ্যাপক সাঈদা আনোয়ার জানান, ‘একমাসের রোগীও পেয়েছি। এমনকি চারদিন বয়সের রোগীও ছিল।’ চারদিনের শিশু কিভাবে আক্রান্ত হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা পজিটিভ মায়ের কাছ থেকে সে সংক্রমিত হয়েছে।

অধ্যাপক সাঈদা আনোয়ার আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালে নন-কোভিড এরিয়াতে সবসময়ই অনেক রোগী থাকে। তাদের বেশিরভাগেরই করোনা টেস্ট করানোর পর পজিটিভ এসেছে। তখন তাদের আবার করোনা ইউনিটে নিয়ে আসা হয়। এতেও অনেকের মাঝে ছড়িয়েছে।’

শিশুরা সাধারণত সুস্থ হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু যেসব শিশু আগে থেকে হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা বা দীর্ঘমেয়াদী অসুখে আক্রান্ত তাদের জন্য অবস্থা জটিল হয়ে যাচ্ছে। ঢামেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনও শিশু মারা যায়নি বলেও জানান তিনি।

মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আবু সাঈদ শিমুল বলেন,‘শিশুরা কিন্তু সিভিয়ারিটি নিয়েও আসছে। ডায়রিয়া, বমি, শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে অনেকের। কাশি নেই, কিন্তু প্রচণ্ড জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়া-এমন রোগী বেশি পাচ্ছি। এক্সরে করার পর তাদের অনেকের ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত পাওয়া গেছে।’

হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার জানান, ঢাকা শিশু হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৭০ জনের মতো করোনা আক্রান্ত শিশু চিকিৎসা নিয়েছে । তবে এদের বেশিরভাগই অন্য রোগে আক্রান্ত ছিল এবং অস্ত্রোপচারের আগে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়েও অনেক শিশুর পজিটিভ ধরা পড়েছে বলে জানান তিনি।