ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছিল বলেই করোনাকালে সুফল পেয়েছি

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছিল বলেই করোনাকালে তার সুফল মিলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা অনলাইনে এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছে। তথাপি এই করোনাকালে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে এই ফল প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পরিবারগুলো ছোট হয়ে এসেছে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীকে একাকিত্বে ভুগতে হয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, অনলাইন বা টেলিভিশনে তার সরকার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে সেটা ঠিক, কিন্তু স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার যে নির্মল আনন্দ প্রাপ্তি তা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ছিল।

বর্তমানে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) শেষের দিকে খুলে দেওয়ার আশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন একটু খারাপ সময় গেলেও আমরা আশা করি এ মাসের শেষে দিকে অবস্থার একটু পরিবর্তন হবে। সেই সময় আমরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারবো।

এসময় সরকার সর্বস্তরের মানুষকে সুরক্ষার জন্য টিকা দেওয়ার যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার আওতায় এসে সবাইকে টিকা গ্রহণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

টিকা গ্রহণে অনেকের অনীহার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যাতে আমরা খুলতে পারি সেজন্য টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কাজেই যারা এ পর্যন্ত টিকা নেননি তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে- আপনারা টিকা নিয়ে নেবেন। এই টিকা নিলে পরে করোনা ধরলেও সেটা ওরকম খারাপ পর্যায়ে যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে যখনই আমরা করেনাকে একটু নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি তখনই স্কুলগুলো চালু করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে- আবার নতুন সংক্রমণ দেখা দিলো। সরকার ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু ২০২২ সালে এসে এই ফেব্রুয়ারি মাসের আগ থেকে আবার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, আমরা খুব দ্রুত সমাধান করতে পারবো। ইতোমধ্যে আমরা টিকাও দিচ্ছি। যেসব ছেলে-মেয়ের বয়স ১২ বছরের ওপরে তাদেরকেও টিকা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংশ্লিষ্ট ১১টি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফলাফলের পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

এবছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ১১টি শিক্ষাবোর্ডে বিভাগ ভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ছয়টি পত্রে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী এসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।