মানব দূষণে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

দখল-দূষণের পাশাপাশি মাছের প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হওয়ায় রাঙামাটি লেকের বাঘাআইড়-পাঙ্গাসের মতো অন্তত সাত প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্তের পথে মহাশোল-পাবদা-গুলশার মতো আরও ৬ প্রজাতির মাছ। আর কমেছে রুই-কাতলা-মৃগেলের পরিমাণ। মাছের এ বিশাল ভাণ্ডার টিকিয়ে রাখতে কাপ্তাই লেকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।

রাঙামাটির কাপ্তাই লেক থেকে বছরে অন্তত ১০ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হলেও দখল-দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরার ফলে ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে অনেক প্রজাতির মাছ। এক জরিপে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে কাপ্তাই লেক থেকে সীলন-সরপুঁটি-ঘাউরা-বাঘাআইড়-দেশি পাঙ্গাসের মতো সাত প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে। বিপন্ন অবস্থায় আছে ৬ প্রজাতির মাছ।মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার উদ্দিন বলেন, দুইটা বিডিং মোটামুটি মৃত, আর বাকি যে দুইটা আছে সেখানে খুবই সামান্য মাছ বিট করতে পারে সেখানে।    

৭২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ লেকে কেচকি-চাপিলা-মইল্যা-তেলাপিয়া এবং বাটার মতো ছোট মাছ পাওয়া গেলেও রুই-কাতলা-মৃগেল মাছ আর পাওয়া যাচ্ছে না।রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা কিছু মাছের রেনু উৎপাদন ও সংগ্রহ করার চেষ্টা করব। যদি আমরা রেনু থেকে কোয়ালিটি পোনা উৎপাদন করতে পারি তাহলে সেখান থেকে আমরা লেকে ছাড়ব।  

 মৎস্য বিজ্ঞানীদের দাবি, দখলের কবলে পড়ে কাপ্তাই লেকের মাছের প্রজনন ক্ষেত্রগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) মৎস্য অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম নুরুল আবসার খান বলেন, অবশ্যই আমাদের মৎস উৎপাদন বাড়াতে হলে দখলদারিত্বের মনোভাব পরিহার হবে। দুষণ কমানোর দিকেও নজর দিতে হবে।এ অবস্থায় সরকারি অনুমোদন পেলেই মাছ রক্ষায় কাপ্তাই লেকে ক্যাপিটেল ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।তবে লেকের আশপাশের খামার থেকে পোনা লেকে ঢুকে গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প, থাই, পাঙ্গাস, নাইলোটিকা এবং মোজাম্বিক তেলাপিয়ার মতো আরও ৮ প্রজাতির বিদেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে এখানে।