কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কোপে টিভি উপস্থাপকের চাকরি

।। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক ।।

চীনের রাষ্ট্রচালিত সংবাদ সংস্থা ‘সিনহুয়া’ টিভি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা, খবর পাঠের মতো কাজগুলোতে এআইয়ের ব্যবহার শুরু করেছে। ব্যাপারটা এমন যে, টিভি স্ক্রিনে দর্শক একজনকে খবর পাঠ করতে দেখবেন, কিংবা কোনো অনুষ্ঠানের উপস্থাপককে, অথচ তিনি কোনো মানুষ নন। মানুষের প্রতিমূর্তি ধারণকারী ওই উপস্থাপক আসলে একটি কম্পিউটারাইজড প্রোগ্রাম মাত্র। পূর্ব চিনের ঝেজিয়াং প্রদেশে আয়োজিত পঞ্চম বিশ্ব ইন্টারনেট সম্মেলনে প্রদর্শনের মাধ্যমে সিনহুয়া প্রথম এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে।

বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে চলছে অটোমেশন। সমস্ত খাতেই ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ইংরেজিতে ডাকা হয় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা ‘এআই’ নামে। সাধারণ মানুষ এ ধরনের কিছুকে ‘রোবট’ নামেই ডাকে। গাড়ি নির্মাণ শিল্পের (ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি) অধিকাংশই ইতোমধ্যে এআইয়ের দখলে চলে গেছে। অচিরেই গাড়ি চালনার কাজটিও তারাই করবে। ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন পেশাও পড়েছে এআইয়ের চ্যালেঞ্জের মুখে। এবার টিভি মিডিয়াতেও দেখা গেল এআইয়ের প্রকোপ।

উপস্থাপক ও সঞ্চালকদের জন্য টিভি কর্তৃপক্ষের যে ব্যয় হয় তার তুলনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে চলা এ ধরনের রোবট প্রোগ্রামের পেছনে ব্যয় হচ্ছে অনেক কম। সিনিয়র টিভি উপস্থাপকদের বেতন অনেক বেশি। অথচ টিভি আর্কাইভ ব্যবহার করে এআই তাদের উপস্থাপনা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সহজেই কাজে লাগাতে সক্ষম। আশঙ্কা করা হচ্ছে, টিভি মিডিয়ায় এআইয়ের ব্যবহার বাড়তেই থাকবে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির যত বিকাশ ঘটছে, মানুষের মধ্যে আশঙ্কাও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বলা হচ্ছে, মানুষ করছে এমন অধিকাংশ কাজই আগামীতে এ ধরনের যন্ত্রের দখলে চলে যাবে। মানুষকে বেতন ও ভাতা দিতে হয়, তার অধিকারের সীমাও প্রলম্বিত। কিন্তু রোবট একবার অর্থ ব্যয় করে কিনলেই হবে, বাকি থাকে শুধু তার রক্ষণাবেক্ষণ। ব্যবসায়ীরা চান অধিক মুনাফা। রোবট ব্যবহার করলে ব্যয় কমিয়ে মুনাফা বাড়ানো সম্ভব। ফলে বিভিন্ন পেশায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েই চলেছে।