ঈশ্বরদীতে ডিমের দাম কমেছে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদীতে হঠাৎ ডিমের দাম কমে গেছে। এর ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি খামারিদের।

খামারিরা জানান, মুরগির খাবার, বাচ্চা, ওষুধ, শ্রমিকের মজুরি, খামার তৈরির নানা উপকরণের দাম বাড়ায় খামার টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যই গত কয়েকদিন ধরে আশঙ্কাজনক হারে ডিমের দাম কমে গেছে। ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমে পাঁচ টাকা ৬০ পয়সা কমে বিক্রি হচ্ছে।

তাদের দাবি, প্রতি ডিমে তাদের উৎপাদন খরচ হচ্ছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা। সেখানে তারা বিক্রি করছেন ৯ টাকা ১০ পয়সা। এতে প্রতিটি ডিমে তাদের খরচের চেয়ে এক টাকা ৪০ পয়সা ঘাটতি পড়ছে।

ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ডিমের আড়ত ঘুরে জানা যায়, ০১ নভেম্বর প্রতি হালি ডিম খামারিরা ৪২ টাকায় বিক্রি করেছেন। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সা।

ঈশ্বরদী বাজারের নিউ ইসলাম ডিম আড়তের স্বত্বাধিকারী খায়রুজ্জামান খান বলেন, ‘খামারিদের কাছ থেকে ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা হালি দরে ডিম কিনে বিক্রি করছি ৩৬ টাকা ৮০ পয়সা।’

হঠাৎ ডিমের দাম কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম নির্ধারণ হয় রাজধানীতে। যারা খুচরা বা পাইকারি ডিমের কারবারি তারা মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার দর জেনে ডিম কিনতে আসে।’

খুচরা ডিম বিক্রেতা পৌর শহরের মোড়ে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রতি হালি ডিম ৪০ টাকা হালি বিক্রি করছি।’

দাশুড়িয়া ইউনিয়নের খারজানি গ্রামের খামারি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিনের ব্যবধানে খামারে ডিমের দাম কমেছে হালি প্রতি প্রায় পাঁচ টাকা ৬০ পয়সা। ৪২ টাকা হালির ডিম এখন ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা। প্রতি পিস ডিম উৎপাদন খরচ যেখানে প্রায় ১০ টাকা ৫০ পয়সা সেখানে বিক্রি করতে হচ্ছে নয় টাকা ১০ পয়সা। প্রতি ডিমে এক টাকা ৪০ পয়সা ঘাটতি। এ ঘাটতি কীভাবে খামারিরা পূরণ করবে। এভাবে চলতে থাকলে খামার বন্ধ হয়ে যাবে।’

পৌর শহরের অরণকোলা এলাকার খামারি সেলিম জোয়াদ্দার বলেন, ‘আমার খামারে দুই হাজার লেয়ার মুরগি আছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা। ডিমের দাম যদি না বাড়লে প্রতি মাসে প্রায় এক লাখ টাকা লোকসান হবে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের পথে বসতে হবে। উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে সরকার ডিমের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দিলে খামারিরা লোকসানের কবল থেকে রক্ষা পেত।’

পাবনা জেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আকমল হোসেন বলেন, খাদ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে আর ডিমের দাম কমছে। এভাবে ডিমের দাম কমতে থাকলে বাধ্য হয়েই প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিরা কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। তখন ডিম উৎপাদনকারী বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম বাড়িয়ে দেবে। তখন বাধ্য হয়ে বেশি দামে ভোক্তাদের ডিম কিনতে হবে। তাই সরকারের কাছে ক্ষুদ্র খামারিদের দাবি ডিমের বাজার র ওঠানামা করার পেছনে যে সিন্ডিকেট আছে তার লাগাম এখনই টেনে ধরা। যাতে খামারিরা ডিম উৎপাদন করে লাভবান হতে পারে এবং ভোক্তারা ন্যায্যমূল্য ডিম কিনতে পারে।’