ভোক্তার অধিকার সুরক্ষায় তরুণদের সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: আজকে যারা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারাই আগামি দিনগুলোতে পরিবার, সমাজ ও দেশের দায়িত্বভার নেবে। আর তরুণদের সম্মিলিত প্রতিরোধে পাওয়া আমাদের মহান স্বাধীনতা। তাই তরুণ সমাজ যদি ভোক্তাদের প্রতি অবিচার, হয়রানি ও প্রতারণারোধসহ ভোক্তার অধিকার সুরক্ষায় সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাহলেই জাতির এই সংকটের সমাধান সম্ভব।

শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর ক্যাব বিভাগীয় কার্যালয়ে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় বিভিন্ন বক্তাগণ এসব মন্তব্য করেন।

ক্যাব যুব গ্রুপের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।

আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব যুব গ্রুপের আমজাদুল হক আয়াজ, ইব্রাহিম ফারুক, মিনা আকতার, ইমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মদ করিমুল ইসলাম, ওমর করিম, মুহাম্মদ রায়হান, তানিয়া সুলতানা, খালেদ সাইফুল্লাহ, পলি দাস, দিসরাতুল মুনতাহা, ফাতিন, বাবলু বড়ুয়া, মো. রায়হান, ইয়াসিন আরাফাত, সাফার আহমদ, আরাফাত হোসেন ও আবরুল করিম নিহাল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সব ধরনের খাদ্যপণ্যে অতি মুনাফা যেন জাতীয় মহামারী রোগে পরিণত হয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় নেই এমন পণ্য মেলা ভার এবং সর্বশেষ কাগজ-কলমও সেখানে যুক্ত হলো। আর দেশের ১৮ কোটি মানুষ এ সমস্ত অন্যায়, অবিচারকে নিরবে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীসহ মূল্য সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। আবার সরকার তাদেরকে মন্ত্রী, এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা বানিয়ে পুরস্কৃত করছে। তাই এখন সময় এসেছে এ সমস্ত অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার।

সভায় বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা মানুষের জীবন রক্ষাকারী হলেও এখানে রক্ত পিপাসু ওষুধ কোম্পানীর নজরে পড়ে সর্বশান্ত হবার উপক্রম। চিকিৎসকদের উপহার, উপটৌকন, কমিশন দিয়ে কিনে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী কায়দায় ওষুধ ও প্যাথলজিক্যাল ব্যবসার নামে সাধারণ রোগীদের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এর পুরো দায়ভার নিতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের। ওষুধ ব্যবসায় এ ধরনের অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ না হলে জাতিকে এর বিপুল মাশুল গুনতে হবে। দেশব্যাপী লক্ষ লক্ষ মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের নামে উপহার ও কমিশন বিলিকারীদেরকে নির্লজ ভাবে ঘুষ বিতরণের হাতিয়ে পরিনত করা হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক।

সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু বড় বড় কর্পোরেট গ্রুপগুলো কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটির (সিএসআর) নামে নানা ভাবে লোক দেখানো ও পত্রিকা-মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করে দান খয়রাত করলেও আবার ভোক্তার পকেট কেটে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছেন। বিজ্ঞাপন ও অনুষ্ঠান পুষ্টপোষকতার অস্ত্র ব্যবহার করে কর্পোরেট গ্রুপগুলো গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে নানা অপকর্ম করছেন। সমাজের অপরাধ, অনিয়ম ও সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজীতে যুক্তরা সুসংগঠিত আর তথাকথিত ভালো মানুষগুলো অসংগঠিত। আর এ সুযোগে গুটিকয়েক দুষ্টু লোক পুরো সমাজকে কুলষিত ও নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের হাতে এখন সমাজ, রাজনীতি ও ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল ক্ষমতার কাঠামো। মেধাবীরা অবমূল্যায়িত হয়ে দেশ বিমুখ হয়ে দেশের পেশার পেশা ছেড়ে বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে, যা জাতিকে মেধা শুণ্য জাতিতে পরিণত করছে।

সভায় ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কার্যক্রম বাড়ানো, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কমিটি গঠন, সমাজ পরিবর্তনে আগ্রহী যুবকদের সম্পৃক্ত করতে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম জোরদারসহ নানা সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।