নামিদামি কোম্পানির নকল প্যাকেট বিক্রি, ভোক্তা অধিদপ্তরের জরিমানা

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: ইউনিলিভার, প্রাণ, স্কয়ার, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের লাল চিনিসহ দেশী এবং বিদেশী নামিদামি সব কোম্পানির মোড়ক (প্যাকেট) বিক্রি হচ্ছে চকবাজারে। যে কেউ চাইলেই যেকোনো ব্র্যাণ্ডের প্যাকেট অর্ডার করতে পারবেন। নিমিষেই হুবহু আসলের মত প্যাকেট প্রস্তুত করে দেবে। যা সাধারণ মানুষের চোখে ধরা পড়বে না। ভোক্তারা আসল পণ্য ভেবে নকল পণ্য কিনে প্রতারিত হবেন।

এমন নকল প্যাকেট চকবাজারের কয়েকটি দোকান থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে সাপ্লাই দেওয়া হয়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সারাদেশে নকল পণ্য ছড়িয়ে পড়ছে । প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।

রোববার নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পুরান ঢাকার চকবাজারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল জব্বার মন্ডল, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম ও রজবী নাহার রজনী।

পূর্ব তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের সিয়াম প্যাকেজিং নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের লাল চিনি, ডিটারজেন্ট, বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, মসলা, চা, চালসহ নামিদামী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল মোড়ক (প্যাকেট) বিক্রি করতে দেখা যায়। এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিটারজেন্ট অবৈধভাবে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব অপরাধে এই প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এবং জনস্বার্থে আগামী সাত দিনের জন্য এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া আমদানীকারক ছাড়া বিদেশী পণ্য বিক্রি এবং পণ্যের মোড়কে মূল্য না থাকায় ইউনুস এন্টারপ্রাইজ এবং আমান বিউটি কনসেপ্টকে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, চকবাজারের সিয়াম প্যাকেজিং নামের প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট হুবহু নকল করে বিক্রি করছিল। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের লাল চিনির কয়েক লাখ নকল প্যাকেট এখান থেকে বিক্রি করা হয়েছে। এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং আগামী সাত দিনের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরে প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজপত্র সহ মালিককে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। যদি সঠিক কাগজপত্র এবং ব্যাখ্যা দিতে পারে তবে এই প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে অন্যথায় স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলেন, অনেক ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান এসে বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটের অর্ডার করলে হুবহু প্যাকেট সাপ্লাই দেওয়া হয়। চকবাজারে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা এমন নকল প্যাকেট বিক্রি করেন। এসব নকল প্যাকেট কেরানীগঞ্জে কারখানায় তৈরি করা হয় বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।