পঁচা কিসমিসে ড্রাই ফুড, মালিককে ভোক্তা অধিদপ্তরে তলব

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: পঁচা এবং পোকা ধরা কিসমিস দিয়ে ড্রাই ফুড তৈরি করায় রামিসা ডায়েটি নাটস নামের প্রতিষ্ঠানের মালিককে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে তলব করা হয়েছে।

রোববার ডেমরার পশ্চিম সানারপাড় এলাকায় অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং মো. মাগফুর রহমান।

অভিযানে যা দেখা গেল
ড্রাই ফুডের জন্য আমদানি করা কিসমিসের কার্টুনে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা রয়েছে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস। এসব কিসমিস দিয়ে ড্রাই ফুড বানিয়ে নতুন করে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ২০২৪ সাল লিখে পুনরায় নতুন মোড়কে মোড়কজাত করতে দেখা গেছে। এছাড়া কারখানায় পঁচা এবং পোকা ধরা ১০ কার্টুন কিসমিস সংরক্ষণে রাখতে দেখা যায়। কারখানায় দায়িত্বে কর্মরত ব্যবস্থাপক জানান, ড্রাই ফুডের এসব উপাদান মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হয়।

ভোক্তা অধিদপ্তরের নির্দেশনা
তাৎক্ষণিক কারখানার মালিক উপস্থিত না থাকায় আগামীকাল (সোমবার) ড্রাই ফুডের সকল উপাদান আমদানি করার বৈধ কাগজপত্র এবং লাইসেন্সসহ ভোক্তা অধিদপ্তরে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কিভাবেমেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ নির্ধারণ করা হয় তার যথাযথ ব্যাখ্যা দিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রামিসা ডায়েটি নাটস’র ব্যবস্থাপকের বক্তব্য
দায়িত্বে থাকা রামিসা ডায়েটি নাটস’র ব্যবস্থাপক মামুন বলেন, ড্রাই ফুডের জন্য বিভিন্ন ফুড মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। নষ্ট যে ১০ কার্টুন কিসমিস পাওয়া গেছে, সেগুলো আগেই সরিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা এগুলো ফেলে দিতাম। কিন্তু তার আগেই ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসে দেখে ফেলে। তবে রামিসা ডায়েটি নাটস’র মোড়কে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ২০২৪ সাল কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লেখা হলো সে বিষয়ে সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি।

বললেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, রামিসা ডায়েটি নাটস নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিদেশী বিভিন্ন ফুড আমদানি করে দেশের বাজারে ড্রাই ফুড বানিয়ে বিক্রি করছিল। আমদানি করা ফুড এবং তাদের বাজারজাত করা ড্রাই ফুডের মোড়কে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখের মধ্যে গড়মিল পাওয়া যায়। কারখানায় অভিযানে ১০ কার্টুন পঁচা এবং পোকা ধরা কিসমিস সংরক্ষণ করতে দেখতে পাই। একই সাথে যারা এসব ফুড প্রডাক্ট প্যাকেজিং করছেন সেসব শ্রমিকদের কোনো স্বাস্থ্য সনদ নেই। এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিককে ভোক্তা অধিদপ্তরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরে একটি মুদি দোকানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। দোকানের ফ্রিজে ২০২০ সালে মেয়াদ শেষ হওয়া জুস পাওয়া যায়। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ রুটি এবং মেয়াদ লেখা নেই এমন বেকারী পণ্য পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে ভোক্তা অধিকার আইনে সতর্কতামূলক পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।