রোববারের অপেক্ষায় বিআরটিএ

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে বাজারে এ মূল্য কার্যকর। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল-কেরোসিনের দাম দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকায়।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইতোমধ্যে সরব হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে চলছে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট। তবে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।

ধর্মঘটে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। বিশেষ করে শুক্রবার ২৬টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে চাকরিপ্রত্যাশীদের। একই দিনে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের বাণিজ্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া আজ শনিবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও সাত কলেজের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিতেও পদে পদে ভোগান্তিতে পড়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। অনেকেই যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।

এদিকে, বাস বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। তারা ১০০ টাকার ভাড়া ৫০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত চাইছেন। অথচ সড়কের এ নৈরাজ্যের বিষয়ে নির্বিকার সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তারা রোববারের (৭ নভেম্বর) ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন।

তবে জনদুর্ভোগ বিবেচনায় পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘রোববার বিআরটিএ-এর ভাড়া পুনর্নির্ধারণ কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাস্তবভিত্তিক মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যম জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে।’

সড়কের এ সংকট সমাধানের বিআরটিএ-এর কোনো উদ্যোগ আছে কি না, জানতে চাইলে বিআরটিএ পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এ ধর্মঘট করছে তারা (বাস-ট্রাক মালিক)। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। কাল (রোববার) আমাদের বৈঠক আছে।’

ধর্মঘট প্রশ্নে একই কথা জানিয়েছেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল (৭ নভেম্বর, রোববার) বেলা ১১টায় মিটিং আছে, সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় জনজীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কায় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমন সংকটে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তবে কর্তৃপক্ষের ‘ধীরে চলো নীতিতে’ অনেকেই ক্ষোভ জানিয়েছেন।