কর্মক্ষেত্রে নারী নিপীড়ন বন্ধে আইএলও কনভেনশন অনুস্বাক্ষরের দাবি

নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, প্রত্যেকটি খাতে নারী শ্রমিক বাড়লেও হলেও কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তাই কর্মক্ষেত্রে নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে সরকারকে আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুস্বাক্ষরের দাবি জানান তারা।

শুক্রবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, অর্থনীতির চাকা ঘোরে শ্রমিকের শ্রমে ও ঘামে। খাদ্যের নিশ্চয়তা, অর্থনীতিকে সচল রাখা, দেশকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে আছে শ্রমজীবীদের অক্লান্ত পরিশ্রম। যেখানে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ ক্রমশ বাড়ছে। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিকসহ বিভিন্ন খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে কর্মস্থলে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি, প্রতিরোধ করা যায়নি যৌন হয়রানি। কর্মক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের যৌন হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা।

আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুস্বাক্ষরের গুরুত্ব উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ‘কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন কনভেনশন-১৯০’ প্রণয়ন করে। যা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সহিংসতা ও হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা আইএলও সদস্যভুক্ত প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকারকর্তৃক আইএলও কনভেনশন-১৯০ অনুস্বাক্ষরের দাবি আজ সকলের। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে এই কনভেনশনটি বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত হলে, বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেমন সুদৃঢ় করবে, তেমনি সরকারের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

এসময় তারা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। তারমধ্যে রয়েছে- আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আইন করে সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা আইনে রূপান্তর করা। কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানিমুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা। এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রতিকার এবং সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম। বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, যুগ্ম সম্পাদক খাদিজা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা সেলিনা হোসেন প্রমুখ।