খাদ্যের মান নিয়ে আপোষ না করার অঙ্গীকার

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম সরকার বলেছেন, ‘কারো ব্যবসা জেল জরিমানার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করা আমাদের উদ্দেশ্য না। আমাদের উদ্দেশ্য ব্যবসার সম্প্রসারণ। তবে সেটি আইনসম্মত ভাবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের মাধ‌্যমে। খাদ্যের মান নিয়ে কখনো আপোষ করা হবে না।’

বুধবার রাজধানীর শাহবাগস্থ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভবনে আয়োজিত ‘নিউট্রেশন লেবেলিং অব প্রসেস ফুড’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, ‘খাদ্য অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে, যেটা নিরাপদ না সেটিকে কখনোই খাদ্য বলা যাবে না। আপনি যখন কোনো পণ্য বিক্রি করবেন সেটা সম্পূর্ণ নিরাপদ নিশ্চিত হয়েই বিক্রি করতে হবে। লেবেলিংয়ের মাধ‌্যমে খাদ্যের উপাদান ও পুষ্টিগুন সম্পর্কে সবকিছু জানাতে হবে। কারণ ভোক্তার অধিকার আছে সে কি খাচ্ছে ও তাতে কি পুষ্টিগুণ আছে সেগুলো জানার। ভোক্তা যদি তার খাবারে লেবেলিংয়ের সঠিক পুষ্টিগুন সম্পর্কে না জানতে পায় তাহলে ভোক্ত‌া আইনগত ব‌্যবস্থা নিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ভোক্তা টাকা দিয়ে পণ্য কিনেছে তার জানার অধিকার আছে খাবারের উপাদান-উপকরণ কি? নিউট্রেশন সম্পর্কে লেবেলিংয়ে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় স্পষ্ট অক্ষরে খাদ্যের উপাদান লেখা থাকতে হবে। প্রোডাক্টের লেবেলিং এ সকল তথ্য দিতে হবে। অনেকের বিভিন্ন খাবারে এলার্জি থাকে, তাই খাবারে এলার্জি আছে কি না- হাইলাইট করে তা লিখতে হবে। কোন খাবারে নিউট্রিশন, ফ্যাট, লবন, চিনির পরিমাণ কি সব লিখতে হবে বড় করে। যাতে সহজেই দেখা যায়৷’

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় খাদ্যে ভেজালের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা খাদ্যে ভেজালে জিরো ট্রলারেন্স। আমাদের দেশেও খাদ্যে ভেজালে যাবজ্জীবন পর্যন্ত আইন আছে। আরও বিভিন্ন জেল জরিমানার বিধান রয়েছে।’

বিজ্ঞাপনের নতুন নীতিমালার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘টেলিভিশন, পত্রিকা বা অন্যান্য মাধ্যমে অতিরঞ্জিত কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। বিজ্ঞাপনের নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। অতিরঞ্জিত যে সকল বিজ্ঞাপন আছে সেগুলোও সরাতে হবে।’

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে আমাদের কি শুধুমাত্র জ্ঞানের বা প্রশিক্ষণের অভাব? আসলে কিন্তু তা না। আমরা অনেকে জেনে শুনে বাণিজ‌্য বা বেশি অর্থ লাভের আশায় অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করে থাকি। আসলে আমাদের নৈতিকতার অভাব। এই নৈতিকতার জায়গাগুলো আমরা যদি নিজেরা নিজেদের কাছে কমিন্টমেন্ট করতে না পারি তাহলে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ সম্ভব না। ব্যবসায়ীদের জ্ঞান বা জানার অভাব নেই। তাদের নৈতিকতার অভাব, এ জন্য তারা খাদ্যে ভেজাল মেশায়।’

জনস্বাস্থ‌্য ও পুষ্টি বিভাগের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য রেজাউল করিম।

এছাড়াও, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম‌্যানের একান্ত সচিব অভিরুপ সাহা ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সকল কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তারা।