ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ

আজ ভোর থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। সব ধরনের যান্ত্রিক গণপরিবহন, অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্ত মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না।

গতকাল বিধিনিষেধের আগের দিনই ঢাকা ছেড়েছে লাখো মানুষ। ঢাকার প্রতিটা প্রবেশ পথ ও ফেরিঘাটগুলোয় ছিল উপচে পড়া ভিড়। পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি রওনা হন নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ।

বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়াতে বাড়াতে কোরবানির ঈদ পার করে দেওয়া হতে পারে- এমন আশঙ্কায় শেষ সুযোগ হিসেবে গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন অনেকে। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটে বহু পথ পাড়ি দিতে হয়েছে ঘরমুখো এসব মানুষকে। ভোগান্তি সঙ্গে করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভেঙে ভেঙে গ্রামের বাড়ির পথে রওনা হন তারা। ভাড়া গুনতে হয়েছে কয়েকগুণ বেশি। যাত্রাপথে ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই।

পিকআপে, কখনো ইজিবাইক, ট্রাক, অটোরিকশা বা মাইক্রোতে চড়ে ফিরেছেন বাড়ি। পুলিশ চেকপোস্ট থাকায় ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথগুলো পার হয়েছেন পায়ে হেঁটে বা রিকশায় চড়ে। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় ছিল ঘরমুখো মানুষের ঢল। উপচে পড়া ভিড় ছিল শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটেও। গতকাল দুপুরে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাওয়ার পথে দেখা যায়, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ৬-৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছেন অনেক মানুষ।

লকডাউনের খবরে গত চার-পাঁচ দিন ধরেই ফেরিঘাটে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। গতকাল সকাল থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করে। সকাল থেকে যেসব ফেরি ছেড়ে যায় তাতে ৮০ শতাংশের বেশি জায়গা যাত্রীদের দখলে ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ে। সকালে ১৪টি ফেরি চললেও চাপ বাড়ায় পরে ১৬টি করা হয়। শিমুলিয়া থেকে যাত্রী বোঝাই করে ফেরিগুলো ছেড়ে গেলেও বাংলাবাজার থেকে ফিরছে খালি। ফেরিতে গায়ে গা লাগিয়ে নদী পার হতে দেখা গেছে মানুষকে। গতকাল শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল।

গতকাল সকাল থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। ঢাকা আরিচা মহাসড়ক ও হেমায়েতপুর সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশাসহ ছোট যানবাহনে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে জড়ো হয় মানুষ। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকায় যাত্রীরা সহজেই পদ্মা পাড়ি দেন। বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত মহা-পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, পরিবহন না চলায় ঘাটে চাপ নেই। অনেক সময় যানবাহনের জন্য ফেরি বসে থাকে। এই নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।