ভোক্তা অধিকার আইনে কারাদণ্ড প্রদানে আইনিই কি বাধা?

রইস উদ্দিন সরকার: গত ১৫ মার্চের দৈনিক সমকালে জসিম উদ্দিন বাদলের একটি লেখায় উঠে এসেছে- আইনের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে অপরাধীকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে পারছে না জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন অর্থদণ্ডের বদলে কারাদণ্ড দিতে হবে। সে জন্য আইন সংশোধন জরুরী।

ভোক্তা-অধিকার আইনে কারাদণ্ড প্রদানের জন্য আইনের সংশোধনী একান্ত জরুরী এটা সঠিক বলে মনে হয় না। বিদ্যমান আইনেই কারাদণ্ড প্রদান করার বিধান রয়েছে এবং প্রদান করাও সম্ভব। প্রয়োজন সদিচ্ছা, দক্ষতা আর প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের।

বর্তমান আইনেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে বিচার করে এই আইনে অপরাধীদের কারাদণ্ড প্রদান করা সম্ভব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রশাসনিক ক্ষমতায় এটা দেয়া সম্ভব কি না? আইন সংশোধন করে প্রশাসনিক ক্ষমতায় কারাদণ্ডের বিধান করা হলে তা সাংবিধানিক প্রশ্ন চলে আসবে। তাই প্রশাসনিক ক্ষমতায় কখনই কারাদণ্ড প্রদান করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। যেহেতু সংবিধান অনুযায়ী বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হবে। এমনিতেই ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন সংবিধান পরিপন্থী কি না সে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।

এই আইনে তদন্তকারী কর্মকর্তা মহাপরিচালক অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। এখানে দুর্বলতা হচ্ছে প্রথমত জনবলের অভাব, দ্বিতীয়ত তদন্ত করার সক্ষমতা ও দক্ষতা এবং মামলার আইনি সহায়তা প্রদান। এই আইনে ভোক্তা অধিদপ্তরের  ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সমপরিমাণ ক্ষমতা প্রদান করা হলেও সেই অনুযায়ী দক্ষতা অর্জনের সুযোগ-সুবিধা তথা প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষতা অর্জন করানো সম্ভব হয়নি। আর আগেই বলেছি জনবলের স্বল্পতা তো রয়েছেই।

তাই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ আর দক্ষতা অর্জনই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে। অপরাধীকে বিচারিক আদালতে নিয়ে কারাদণ্ড প্রদানের আওতায় নিয়ে আসতে। আইনি সীমাবদ্ধতা এখানে কোন বাধা নয়।