এক ইউপিতে ২৮ ইটভাটা, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন ২৮টি ইটভাটা। এসব ভাটার জন্য নিয়মিত কাটা হচ্ছে পাহাড়। পাশাপাশি ইট পোড়াতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা জন্য বনের গাছ।

জানা গেছে, ভাটাগুলো ফসলি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বনাঞ্চল ও পাকা সড়কের পাশে অবস্থিত। পরিবেশবান্ধব চুল্লি না থাকায় সেখান থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া লোকালয়ে চলে আসছে। এতে পরিবেশ দূষণ ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, জেলার সাত উপজেলায় ৭০টি ইটভাটার মধ্যে শুধু ফাইতং ইউনিয়নে ২৮টিসহ লামা উপজেলায় রয়েছে ৩৩টি ভাটা।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩তে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা নির্মাণ, ইট তৈরিতে কৃষি জমি বা পাহাড় কেটে মাটি ব্যবহার করতে পারবে না। অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা, খাল, পুকুর, নদীরপাড় বা চরাঞ্চল কেটে মাটি সংগ্রহ করা যাবে না। এলজিইডির সড়ক ইট ও মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কোনো ধরনের কাঠ পোড়ানো যাবে না বরং মানসম্পন্ন কয়লা পোড়াতে হবে। অথচ নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই গড়ে তোলা হয়েছে ভাটাগুলো। ভাটায় নেই পরিবেশবান্ধব চুল্লি নেই।

এদিকে একটি ইটভাটায় দৈনিক ২৫-৩০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে কয়েক লাখ ঘনফুট কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এসব ইটভাটায়। তাই শুধু জরিমানা দিয়ে নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় ইটভাটা তৈরিতে সরকারী নিয়ম মানানোর পাশাপাশি জনসচেতনতাও দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এইচবিএম ব্রিক ফিল্ডের মালিক হুমায়ন কবির জানান, তিনি অবৈধভাবে কোনো ব্লিক ফিল্ড চালাচ্ছেন না এবং পাহাড়ের মাটিও কাটচ্ছেন না।

ইটভাটায় পাহাড়ের মাটি ব্যবহারের কথা অস্বীকার ও সরকারি নিয়মানুযায়ী কয়লার চুল্লি দিয়ে ইটভাটা তৈরিতে খরচ বেশি হওয়ায় নিয়ম মানা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ফাইতং ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কবির খান। তিনি বলেন, সরকারি নিয়মকানুন মেনে ইটভাটা পরিচালনা করতে গেলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। কয়লার দাম অনেক বেশি বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আয়কর ও শুল্ক দিয়ে ব্রিক ফিল্ড পরিচালনা করে আসছি। পরিবেশ অধিদপ্তরেও আমরা আবেদন করে আসছি। কিন্তু আমরা ছাড়পত্র পাইনি।

তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় পাহাড় কেটে গড়ে উঠা অবৈধ এসব ইটভাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনার কথা জানান পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মফিদুল ইসলাম।