উপযুক্ত আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই

গোলাম রহমান: ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন ঘটেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষের আয় বাড়ছে না। বাজার সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকছে না। বলা হয়ে থাকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বাজারে। আবার বাজারে সিন্ডিকেট সক্রিয় আছে বলেও আলোচনা হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন কি কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে? এসব বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান

প্রশ্ন: চলতি বছরটিকে আমরা বলতে পারি নির্বাচনের বছর। এই সময়ে যে বাজেটটি জাতীয় সংসদে পাস হলো, সেটা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

গোলাম রহমান: এ বছরের বাজেট আশাবাদ, নিয়ম রক্ষা ও গতানুগতিক ধারায় প্রণীত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ভোটারদের মন জয়ের লক্ষ্যে বড় কোনো উদ্যোগ বা জনতুষ্টির বরাদ্দ দেখছি না। সম্ভবত সর্বজনীন জাতীয় পেনশন স্কিম একমাত্র ব্যতিক্রম।

উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত কি না সন্দেহ আছে। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ০ শতাংশ। এ বছর ডিসেম্বরে অথবা আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আইএমএফ থেকে ঋণ গ্রহণের শর্ত পূরণের প্রেক্ষাপটে সংশোধিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রাস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী, গত বছর মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯.০২ শতাংশ, যা বিগত এক যুগে সর্বোচ্চ। অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘাটতি পূরণের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের পরিকল্পনা করেছেন। সম্ভবত তার একটা বড় অংশ আসবে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকশাল থেকে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে উসকে দেবে।

প্রশ্ন: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে নেতিবাচক ধারায় দেশের অর্থনীতি। ডলার সংকট কাটছে না। জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া। এ অবস্থায় দেশের মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য বাজেটে কী করা যেত?

গোলাম রহমান: করোনা মহামারির সময় ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর সব দেশেই ভোক্তাদের নানা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এতে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ে। ভোক্তা চাহিদা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়। জ্বালানি তেলের দাম ও পণ্যের পরিবহন ব্যয় বাড়ে। সারা পৃথিবীতে মুদ্রাস্ফীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তা আরো উসকে দেয়। এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করে চাহিদার লাগাম টানতে উদ্যোগী হয়। এরই মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরবরাহ পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। দেশে দেশে মুদ্রাস্ফীতি এখন নিম্নমুখী। অর্থনীতিতেও স্থিতিশীলতা আসছে। কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ছে।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসৃত নীতি বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অর্থ মন্ত্রণালয় বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এতে অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ পাঁচ গুণ বেড়েছে। অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী অর্থ সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়ে। বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধির ফলে টাকায় আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বহুলাংশে বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে টাকার অঙ্কে কর-ভ্যাটও বাড়ছে। ফলে পণ্যমূল্য বাড়ছে। বিশ্ব বাজারে পণ্যের দরপতনের সুফল থেকে বাংলাদেশের ভোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির আঁচ সহনীয় করার লক্ষ্যে মাননীয় অর্থমন্ত্রী করারোপযোগ্য আয়ের সীমা কিছুটা বৃদ্ধি করেছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। তবে তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, সময়ই বলে দেবে।

প্রশ্ন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। বাস্তবে তা কতখানি সম্ভব?

গোলাম রহমান: মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা সন্দেহাতীতভাবে উচ্চাভিলাষী। তবে সঠিক নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা গেলে কিছু সুফল হয়তো আসতেও পারে।

প্রশ্ন: এখন তো মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য যেসব কৌশল নেওয়া হয়েছে, তা কতটা কার্যকর হবে বলে মনে করেন আপনি?

গোলাম রহমান: বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানাকে প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করে অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রণয়ন হয়তো যুক্তিযুক্ত ছিল। এতে বাজেটের আকার ও ঘাটতির পরিমাণ কম হতো। অন্যদিকে নির্বাচনের বছর। উন্নয়নের পথে ধীরগতি, রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ বাজেট প্রণয়ন করেছেন। প্রবৃদ্ধির উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। তাঁর দায়িত্বকাল অর্থবছরের অর্ধেক সময়। পরবর্তী অর্থমন্ত্রী প্রয়োজনে বাজেট সংশোধন করবেন। বাজেটে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানার সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগ দেখছি না। তবে আশা করা যায়, নভেম্বর-ডিসেম্বরে সাশ্রয়ী মূল্যে শীতের শাক-সবজি বাজারে উঠলে মুদ্রাস্ফীতি হয়তো ২-১ শতাংশ হ্রাস পাবে।

প্রশ্ন: গত মাসের মাঝামাঝি মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এই নীতি সংকোচনমূলক। নতুন মুদ্রানীতি কি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে?

গোলাম রহমান: সাধারণত পরিস্থিতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার হ্রাস-বৃদ্ধি করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্পষ্ট করেছেন, ‘নয়ছয়’ সুদের হার নির্ধারণ এবং তা কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এতে ‘সুদের হার’ বাজারভিত্তিক হচ্ছে না। তাঁদের মতে, মুদ্রাস্ফীতি এক জটিল রোগ। এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী ওষুধের প্রয়োজন। সুদের হার ১-২ শতাংশ বৃদ্ধি করে কোনো কাজ হবে না। সরকার যদি মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করতে চায়, তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংককে ‘সুদের হার’ নির্ধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের বিকল্প নেই। সরকারের ব্যবসাবান্ধব ‘সুদ নীতি’ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তেমন সহায়ক হবে বলে মনে হয় না। আর বিপুল অঙ্কের বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হলে মুদ্রা সরবরাহ হ্রাস পাবে বলে মনে হয় না।

প্রশ্ন: বাজার তো সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকছে না। নিত্যপণ্যের দাম একেবারে আকাশছোঁয়া। তেলের দাম বেড়েছে। চিনির দাম সরকার ঠিক করে দিলেও সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না। আমদানির কোনো প্রভাব পড়েনি পেঁয়াজের দামে। মাছ-মাংসের দাম তো অনেক বেশি। গরিবের পুষ্টি ডিমও এখন গরিবের আয়ত্তের বাইরে। আর অতি সম্প্রতি কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে যা হলো সেটাও তো দেখতে পাচ্ছি। এই যে অনিয়ন্ত্রিত বাজার, এটাকে কিভাবে বাগে আনা যায়?

গোলাম রহমান: আপাতদৃষ্টিতে বাজারে সরবরাহে ঘাটতি নেই। তা সত্ত্বেও দেশে উৎপাদিত এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের মূল্য হু হু করে বাড়ছে। বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে আর ধারকর্জ করে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করছে। অনেক চাহিদাই পূরণ সম্ভব হচ্ছে না। নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও স্থির আয়ের জনসাধারণের জীবনমানে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রশ্ন: বাজার নিয়ন্ত্রণে তো সরকারি সংস্থা আছে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আছে। আছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এসব সংস্থা কি কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে?

গোলাম রহমান: ভোক্তা স্বার্থ দেখার জন্য বিলম্বে হলেও ২০০৯ সালে ভোক্তা-অধিকার আইন, ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইনসহ আরও কয়েকটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি। তাছাড়া আছে বিএসটিআই, খাদ্য বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং আরো নানা সংস্থা। এসব সংস্থার সক্ষমতা সীমিত এবং কোনো কোনোটি একেবারে অকার্যকর। বড় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার নজির খুব একটা নেই।

প্রশ্ন: খুব সাধারণ ভাবে বলা হয়ে থাকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বাজারে। এভাবে সরল সমীকরণ করার কি কোনো সুযোগ আছে? নাকি বাজার সিন্ডিকেট অতি সক্রিয় এখন? সিন্ডিকেট কি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে? এই সিন্ডিকেট ভাঙা কি খুব কঠিন বলে মনে হয়?

গোলাম রহমান: বিশ্ববাজারে অনেক পণ্যের মূল্যই ক্রমান্বয়ে কমে এসেছে। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় নিজ নিজ দেশের ভোক্তাদের বিদেশ থেকে আক্রান্ত মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষার জন্য মুদ্রা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বার বার ‘সুদের হার’ বৃদ্ধি এবং অর্থ মন্ত্রণালয় মুদ্রাস্ফীতি নিরোধক আর্থিক ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দেশে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে দেখানো খোঁড়া যুক্তি।

১৯৯১ সাল থেকে অনিয়ন্ত্রিত ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’ অনুসরণের ফলে দেশে গুটিকয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা অর্জন করেছে। ধারণা করা হয়, বাজারে প্রতিযোগিতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য নির্ধারণ করে অস্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করছে। ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’ অনুসরণের ফল মূল্যায়ন করে এর উপযোগিতা পুনর্নির্ধারণ ও সংস্কারের সময় এসেছে। বাজারে প্রতিযোগিতা থাকলে কারসাজি করে মূল্যবৃদ্ধি ও অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন সম্ভব নয়। গুটিকয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও কাটেলের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সরকারকে খাদ্য বিভাগ, টিসিবির মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিত্যপণ্য সরবরাহ ও বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে বাজার মনিটরিং জোরদার করা সুবিবেচিত হবে।

প্রশ্ন: সরকারের সব উন্নয়ন ও অর্জন তো ব্যর্থ হয়ে যাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে। সে ক্ষেত্রে এখন করণীয় কী? কী পদক্ষেপ নিলে বাজার সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে?

গোলাম রহমান: মূল্য পরিস্থিতি এক দিনে বর্তমান পর্যায়ে আসেনি, তাৎক্ষণিক ভাবে তা নিয়ন্ত্রণও সম্ভব নয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত মুদ্রা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই, তবে তা পর্যাপ্ত নাও হতে পারে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় এনে বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা; সরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি; পাশাপাশি জ্বালানি, কৃষি ও শিল্প খাতে উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি; বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণ; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানোন্নয়ন বাজার পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে আনতে সহায়ক হবে। সাধারণ মানুষের আয়-রোজগার বৃদ্ধি এবং তাদের কল্যাণ ও জীবনমানের উৎকর্ষ সাধন জনজীবনে স্বস্তি ও শান্তি আনতে অপরিহার্য মনে করি। বাজারের আগুনের আঁচ তাতে কিছুটা হলেও সহনীয় হবে।

সৌজন্যে, কালের কণ্ঠ।