৯০ শতাংশ ভোক্তা জানেন না ভোক্তার অধিকার

ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে আইন করা হলেও অধিকাংশ ভোক্তাই জানেন না এর সুফল সম্পর্কে। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মহাপরিচালকের দাবি প্রায় ৩০ শতাংশ লোক জানেন এ আইন সম্পর্কে। লোকবলের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ক্যাব বলছে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে বাড়াতে হবে বাজার তদারকি।

প্রত্যেক ভোক্তাই তার জীবন ও কাজের নিরাপত্তার জন্য যথোপযুক্ত ও নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। এ জন্য ২০০৯ সালে ভোক্তাদের অধিকার আদায়ে গঠন করা হয়েছে ‘ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন’। তাই আগে জানতে হবে, কোন ধরনের অপরাধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করা যাবে। এছাড়া আইন লঙ্ঘন হলে কী সাজা রয়েছে- তা সবারই জানা দরকার।

ক্রেতাদের অধিকার আদায়ে ২০০৯ সালে করা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন। একই বছর এই আইন বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠা করা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ধীরে ধীরে এ অধিদপ্তরের বিস্তৃতি ছড়িয়েছে ৬১ জেলায়। বেড়েছে অভিযোগ প্রাপ্তি ও নিষ্পত্তির সংখ্যাও। তবে বাজার ঘুরে দেখা যায় এখনো অধিকাংশ ভোক্তাই জানেন না তার অধিকার সম্পর্কে।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের দাবি ৩০ শতাংশ ভোক্তা জানেন তার অধিকার সম্পর্কে।ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা ক্যাবের মতে, আইন সম্পর্কে সচেতন করতে অধিদফতরটির রয়েছে দুর্বলতা।ক্যাব এর সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ যেন মালামাল বেশি দামে বিক্রি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।ভোক্তাদের অধিকার আদায়ে সুনির্দিষ্ট অন্তত আটটি অভিযোগের স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।অর্থনীতির ভাষায় অর্থ দিয়ে যিনি কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন তিনিই ভোক্তা। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ৯০ শতাংশ ভোক্তাই জানেন না পণ্য ক্রয়ে তার অধিকার কি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোক্তার অধিকার আদায়ে সবার আগে সচেতন হতে হবে তার নিজেকেই।

ভোক্তা কাদের বলা হয়?-কোন পণ্য বা সেবা যিনি ভোগ করেন বা ভোগের উদ্দেশে কিনে নেন, তিনিই ভোক্তা। ভোগের এসব বস্তু অবশ্যই নিরাপদ ও নির্ভেজাল হতে হবে।

অধিকার?-জীবনের নিরাপত্তা বা কাজের নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে পাওয়ার অধিকার রয়েছে ভোক্তার। এমনকী সেসব পণ্য বা সেবা সঠিক মানে, সঠিক মাপে পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে। এছাড়া পণ্য বা সেবার নির্ধারিত মূল্য বা বিনিময়ে সে পণ্য বা সেবা পাওয়াও ভোক্তার অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই পণ্যের উপাদান, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, বিক্রয়মূল্য, কার্যকারিতা জানার অধিকারও তার রয়েছে।

কখন অভিযোগ করবেন?-ভোক্তার অধিকারের যে কোন একটির ব্যত্যয় ঘটলে, সে পণ্য বা সেবাদানকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার অধিকার তার রয়েছে। এ অধিকারও তিনি সহজাতভাবেই ভোগ করবেন। সর্বোপরি কোন পণ্য বা সেবা ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়াও ভোক্তার একান্ত অধিকার।

যেভাবে অভিযোগ করবেন:

১. দায়েরকৃত অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে

২. ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে

৩. অন্য কোন উপায়ে৪. অভিযোগের সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে

৫. অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন।